অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট বানানোর ক্ষেত্রে আমরা লেখার মানের দিকে যতটা মনোযোগ দেই, ততটা ইমেজের কোয়ালিটি এবং ব্যবহারে দেই না।
অথচ বাস্তব অভিজ্ঞতা বলছে, সঠিকভাবে ইমেজ ব্যবহার করলে লেখার মান যেমন ভালো হয়, ভিজিটরকে আরো বেশি সময় ওয়েবসাইটে রাখাও সম্ভব হয়।
এই লেখা থেকে আপনি যা শিখবেন:
এই ছোট গাইডটিতে অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইটে কিভাবে ইমেজ ব্যবহার করা উচিত ও কিভাবে কপিরাইট ইমেজের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন তার একটা পরিপূর্ণ সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো। এছাড়াও ইমেজ সঠিক ব্যবহারের কিছু টিপস থাকবে যা নিশ্চিতভাবে আপনার ব্লগকে আরও ইউজার ফ্রেন্ডলি করে তুলতে সাহায্য করবে।
কপিরাইটেরের ক্ষেত্রে সতর্কতা ও সাবধানতা
আমরা অনলাইনে যত ছবি দেখি সব ছবির মালিক থাকে। তারা তাদের ছবিগুলো কপিরাইট করে রাখেন যাতে অন্য কেউ তাদের অনুমতি ছাড়া ছবিগুলো ব্যবহার করতে না পারে।
যদি আপনি অনুমতি ছাড়া এমন কোনো কপিরাইট ছবি ব্যবহার করেন, আপনাকে আইনি ঝামেলার সম্মুখীনও হতে হতে পারে।
তাই ওয়েবসাইটে ছবি ব্যবহার করার আগে অবশ্যই কপিরাইট ইস্যু আছে কিনা এবং ছবিটি কোনো ঝামেলা ছাড়াই আপনার নিজের কাজে ব্যবহার করতে পারবেন কিনা- তা যাচাই করা ও নিশ্চিত হওয়া উচিত।
কোন সোর্স থেকে ইমেজ নিলে কোন ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করবেনঃ
- আপনার নিজের তোলা ছবি: আপনার নিজের তোলা কোন ছবি যদি থাকে, আপনি নির্দিধায় তা ব্যবহার করতে পারবেন। এটাই সবচেয়ে নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী উপায়।
- আপনার নিজের তৈরি ছবি: আপনার নিজের ডিজাইন করা গ্রাফিকাল ইলিমেন্টস কোন চিন্তা ছাড়াই আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। শুধু একটি ব্যপার মাথায় রাখতে হবে, যে ইলিমেন্টসগুলো আপনি ব্যবহার করছেন ওগুলোর কোন কপিরাইট ইস্যু যাতে না থাকে।
- স্ক্রিনশট নেয়া ছবি: লেখার সৌন্দেয্যের প্রয়োজনে সাধারণ স্ক্রিনশট ব্যবহার করা যাবে। (যেমনটা এই লেখার নিচের ছবির ক্ষেত্রে করা হয়েছে।) তবে স্ক্রিনশটে কোন আর্টিস্ট অথবা ব্যক্তির কাজ দেখাতে পারবেন না। তাছাড়া অন্য কোন ওয়েবসাইট বা ব্লগ থেকেও অনুমতি ছাড়া স্ক্রিনশট নিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন না।
- স্টক সাইট থেকে নেয়া ছবি: ব্যবহারের জন্য আপনার নিজের ছবি না থাকলে, আপনি বিভিন্ন এজেন্সি থেকে প্রফেশনাল ছবি কিনে ব্যবহার করতে পারেন। এসব স্টক সাইটে ছবির দাম নির্ভর করে ছবির ধরণ এবং পরিমাণে উপর। তবে এসব ছবি কেনার পরও ব্যবহারে তাদের নিয়ম মেনে চলা আবশ্যক। সাইটগুলো বিশেষ কিছু নিয়ম-কানুন লিখে রাখে। অবশ্যই সেগুলো পড়ে নিবেন।
- প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া ছবি: অনেক প্রডাক্টের প্রস্তুতকারক কোম্পানি নিজেই ওয়েবসাইটে ব্যবহার করার জন্য ছবি সরবরাহ করে। সোর্স উল্লেখ করে দিলে এসব ছবি ব্যবহার করতে কোন সমস্যা নেই। তবুও প্রফেশনাল সম্পর্ক তৈরি এবং কোন ঝামেলা এড়ানোর জন্য আপনার উচিত প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টে ইমেইল করে ছবি ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে নেয়া।
- গুগল থেকে নেয়া ছবি: কোন অবস্তাতেই আপনি গুগল ইমেজ থেকে যেকোন ছবি নামিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করতে পারেন না। তবে কাস্টম সার্চ দিয়ে কপিরাইট ইস্যু নেই এমন ছবি খুঁজে নিতে পারলে সমস্যা নেই। সুতরাং গুগল থেকে ছবি নামানোর আগে অবশ্যই কপিরাইট ইস্যু চেক করে নিবেন।
- অন্য ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে নেয়া ছবি: আপনি হয়তো অন্যান্য ব্লগ ও ওয়েবসাইটে আপনার প্রয়োজনীয় ছবি পেতে যেতে পারেন। খুব সহজে ওই ওয়েবসাইটের মালিক থেকে অনুমতি নিয়ে আপনি ছবিগুলো ব্যবহার করতে পারেন। তবে বিনা অনুমতিতে একাজ ভুলেও করবেন না।
- সোশ্যাল মিডিয়া ও ফটো শেয়ারিং ওয়েবসাইট থেকে নেয়া ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া এবং ফটো শেয়ারিং ওয়েবসাইট (যেমন Flickr, Instagram অথবা Pinterest) থেকে ছবি নামিয়েই আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করা উচিত নয়। ওই ছবিতে কোন লাইসেন্স অথবা কপিরাইট আছে কিনা তা যাচাই করে দেখা জরুরি। যথোপযুক্ত তথ্য না পেলে অন্তত সোর্স ক্রেডিট দিয়ে দিবেন।
- ফ্রী ইমেজ ডাটাবেজ থেকে নেয়া ছবি: অনলাইনে অনেক ছবির ডাটাবেজ আছে যেগুলো থেবে ছবি নিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। ব্লগারদের জন্য এটি তুলনামূলক খুবই সাশ্রয়ী একটি পদ্ধতি। এসব সাইট থেকে ছবি ব্যবহার করার আগে অবশ্যই সময় নিয়ে টার্মস এবং কন্ডিশনগুলো পড়ে নিবেন।
সর্বক্ষেত্রে নিরাপদ থাকতে…
আপনি যদি সর্বদা লাইসেন্সকৃত ছবির নিয়ম মেনে চলেন এবং কপিরাইট ছবি অনুমতি নিয়ে ব্যবহার করেন, আপনি নিরাপদে থাকবেন। কোন ছবি ব্যবহারে সামান্যতম সংশয় বা সন্দেহ থাকলে ওই সোর্সে গিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয়া উচিত। অনেক সময় আমরা অনুমান করে ছবি ব্যবহার করি নিরাপদ থাকতে যা মোটেই করা উচিত নয়। ছবির কপিরাইট আইন খুব শক্ত, তাই নিরাপদ থাকতে অবশ্যই আপনার এসব মেনে চলা উচিত।
ওয়েবসাইটে ছবির গুরুত্ব ও কিছু জরুরি পরামর্শ
ছবি আপনার ব্লগ পোস্টকে আকর্ষনীয় করে তোলে। ছবির মাধ্যমে একটা পেইজ বা পোস্টের সৌন্দর্য কয়েকগুন বাড়ানো যায়। জটিল কোন ব্যাখ্যা ছবির মাধ্যমে খুব সহজেই ফুটিয়ে তোলা যায়। এছাড়াও ভালো ছবির মাধ্যমে ভিজিটরের মনোযোগ খুব সহজে আয়ত্ত করা যায়।
তবে কোনো ছবি ওয়েবসাইটে ব্যবহারের করার আগে অবশ্যই সেটি ভালোভাবে অপ্টিমাইজ করা জরুরি। ছবির ফাইল যথাসম্ভব ছোট রাখা রাখুন যাতে সেটি খুব দ্রুত লোড হয়। এছাড়াও ছবিতে মেটা ট্যাগ ব্যবহার করা থেকে শুরু করে বেসিক এসইও ঠিকঠাকভাবে করবেন যাতে সার্চ ইন্জিনে সহজে ইনডেক্স ও র্যাংক হয়ে যায়।
মূল সোর্সঃ How to use Images: Amazon Associate Official Guideline
আজ এখানেই ইতি টানলাম। তবে ইনশাআল্লাহ আপনাদের ফিডব্যাক ও জিজ্ঞাসার উপর ভিত্তি করে পোস্টটি প্রয়োজনানুযায়ী আপডেট করা হবে।
সজিব হক says
সুন্দর একটা পোস্ট। আমার জন্য কেনভা বেস্ট অপসন ❤️
Billal says
অনুবাদটা বেশ ঝরঝরে এবং তকতকে হয়েছে। অল্প কথায় সুন্দরভাবে সবকিছুই চলে এসেছে। বিভিন্ন গ্রুপে ছবি ব্যবহারের ব্যাপারে প্রচুর পোস্ট আসে- সঠিক পদ্ধতিটা না জানার কারণে গুগল হিট, আমাজন এসোসিয়েটে ব্যান খাচ্ছেন অনেকে। এখন থেকে এই লিংকটা টুক করে দিয়ে দেয়া যাবে। আশা করায় অন্তত ছবির জন্য আর কেউ আমাজন কিংবা গুগলের কাছ থেকে ”ব্যথা” (পড়ুন ব্যান) পাবেন না।
তবে এ কথা ঠিক, আমাজন এসোসিয়েটে কাজ করার আগে আমাদের সবারই টার্মস এন্ড কন্ডিশনটা ভালো করে পড়ে নেয়া উচিত।
সবার মঙ্গল হোক।